Best Breast and piles sergeon in narayanganj Dhaka

ব্রেস্ট ক্যান্সার নিয়ে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য

ব্রেস্ট (স্তন) সম্পর্কে সচেতন হোনঃ

আপনি যে বয়সেরই হোন না কেন স্তন সম্পর্কে সচেতন হওয়া আপনার জন্য খুবই জরুরী।

স্তনে চাকা বা গোটা মানেই ক্যান্সার নয়। ক্যান্সার ছাড়াও স্তনে বিভিন্ন কারনে চাকা বা ব্যাথা হতে পারে। স্তনের ৯০ শতাংশ চাকা বা গোটা ক্ষতিকর নয়, এগুলো থেকে ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি থাকে না। স্তনে ক্যান্সার যে কোনো বয়সের নারীদের হতে পারে। পৃথিবী জুড়ে মহিলাদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর পরিসংখ্যানে ব্রেস্ট ক্যান্সার শীর্ষের দিকে। আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম নয়। অথচ প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে স্তন ক্যান্সারের যথাযথ চিকিৎসা রয়েছে এবং পরবর্তীতে সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব। সমস্যা এখানেই যে মহিলারা এখনো এই বিষয়টি নিয়ে সচেতন নন তাই প্রায়ই এমন অবস্থায় রোগ ধরা পড়ে যখন রোগীর মৃত্যু আর ঠেকানো যায় না। এ পরিস্থিতি পরিবর্তনের জন্য নারীদের মধ্যে স্তন পরীক্ষা সম্পর্কে ব্যাপকভাবে সচেতনতা সৃষ্টি জরুরী যাতে তারা স্তনের যে কোন অস্বাভাবিকতা শুরুতেই চিহ্নিত করতে পারেন ও চিকিৎসা নেন।

বেনাইন ব্রেষ্ট ডিজিজ/ স্তনে ব্যাথা বা মাস্টালজিয়াঃ

নারীর মাসিকের সময় স্তনে কিছু পরিবর্তন আসে। টিস্যু বা কোষ বিভিন্ন হরমোন দ্বারা প্রভাবিত হয়। এ কারনে স্তনে চাকা বা গোটা অথবা ব্যাথা অনুভুত হতে পারে এবং মাসিকের পরে চলে যায়। কিছু ক্ষেত্রে গোটা বা চাকা থেকেও যেতে পারে এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শের প্রয়োজন হতে পারে। রোগীর মানসিক অবসাদ ও স্তনে ব্যাথার কারণ হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাথা মাসিকের সাথে সম্পর্কযুক্ত নাও হতে পারে।

স্তন ক্যান্সারের লক্ষন সমুহঃ

১। স্তনে ব্যাথাবিহীন চাকা, উপরিভাগ অমসৃন। চাকা অনেকসময় বগলের নীচে বা কলার বোনের তলাতেও দেখা যায়। এগুলো টিপলে শক্ত লাগে। বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যাথাও হতে পারে।

২। স্তনের আকার ও সাইজ পরিবর্তন

৩। স্তনবৃন্ত (নিপুল) চ্যাপ্টা হয়ে যাওয়া, ঢুকে যাওয়া, বাকা হয়ে যাওয়া বা স্তনবৃন্ত অসমান হয়ে যাওয়া। স্তনবৃন্ত (নিপুল) দিয়ে রক্ত বা পানি বের হওয়া।

৪। একদিকের স্তনবৃন্ত যদি চুলকায় এবং স্তনবৃন্ত ছোট হতে থাকে অথবা যা থাকে তা সহজে ভাল হচ্ছে না। এটি একধরনের ক্যান্সারের লক্ষন

৫। যদি কোন বয়স্ক মহিলার ইনফেকশন এর মত হচ্ছে যেটা এন্টিবায়োটিকে কাজ হচ্ছে না এটাও একধরনের ক্যান্সারের লক্ষন।

৬। স্তনের চামড়ার কোনো পরিবর্তন হলে যেমন কুঁচকানো ভাব, লোমকুনের ছিদ্র বড় হয়ে যাওয়া অথবা রঙের কোন পরিবর্তন।

স্তন ক্যান্সারের ঝুকিঃ

  • যদিও স্তন ক্যান্সারের সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি। কিছু ঝুকিপুর্ন কারণ স্তন ক্যান্সারের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।
  • বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার  ঝুকি বাড়ে।
  • পরিবারে মা, বোন, খালা, নানী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে ঝুকি বাড়ে।
  • জিনগত কারণ ও অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি
  • অল্প বয়সে ঋতুস্রাব শুরু হলে (১২ বছরের মধ্যে) দেরীতে ঋতুস্রাব বন্ধ হলে (৫০ এর উপরে)
  • হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপী নিলে
  • দীর্ঘদিন ধরে জন্ম নিয়ন্ত্রণের বড়ি ব্যবহার করলে স্তন  ক্যান্সারের ঝুকি বাড়ে বলে ধারনা করা হয় মদ্যমান ও অস্বাভাবিক ধুমপান করলে

স্তন ক্যান্সারের ঝুকি কমানোর উপায়ঃ

  • সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
  • হরমোনাল পিল দীর্ঘদিন গ্রহন না করা
  • প্রথম বাচ্চা ৩০ বছরের মধ্যে নেওয়া ও বাচ্চাকে সঠিকভাবে বুকের দুধ পান করানো
  • ধুমপান, এলকোহল থেকে বিরত থাকা
  • নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন  কমপক্ষে ৩০-৪০ মিনিট হালকা শারীরিক ব্যায়াম করা।

রোগ সনাক্তকরণের উপায়ঃ

নিয়মিত স্তন পরীক্ষাকরন বা ব্রেস্ট স্ক্রিনিং এর মাধ্যমে প্রাথমিক অবস্থায় স্তন ক্যান্সার সনাক্তকরণ সম্ভব-

১। আত্ননিরীক্ষণ/সেলফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশনঃ প্রতিমাসে অন্তত একবার মাসিক শুরু হওয়ার ১০ দিন পর ডান হাত দিয়ে বাম স্তন এবং বাম হাত দিয়ে ডান স্তন পরীক্ষা করতে হবে। বগলের নীচে ও স্তনবৃন্তও দেখতে হবে

২। নিয়মিত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ / ক্লিনিক্যাল ব্রেস্ট এক্সামিনেশন – প্রতি বছর একবার চিকিৎসকের মাধ্যমে স্তন পরীক্ষা  করানো।

৩। উপরে উল্লেখিত যে কোন লক্ষণ দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের  পরামর্শ নিয়ে নিম্নলিখিত পরীক্ষা করাতে হবেঃ

          ক) আলট্রাসনোগ্রাম – ৪০ বছরের নীচে

          খ) ম্যামোগ্রাম (স্তনের বিশেষ X-Ray ) – ৪০ বছরের উপরে

          গ) আলট্রাসনোগ্রাম এবং ম্যামোগ্রাম উভয়ই কিছু কিছু ক্ষেত্রে

          ঘ) এফ.এন.এ.সি (FNAC)

          ঙ) বায়োপ্‌সি ( কোর বায়োপ্‌সি)

          চ) সিরাম প্রোল্যাকটিন

স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা

সুনিশ্চিতভাবে স্তন ক্যান্সার নির্নয় হলে সঠিক চিকিৎসা নির্ভর করে কিছু বিষয়ের উপর। রোগীর বয়স, ক্যান্সারের আকার, আকৃতি ও অবস্থান, ক্যান্সারের পর্যায় ও বিস্তৃতি, বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা প্রাপ্যতার উপরঃ

১।  অস্ত্রোপচার – সম্পুর্ন স্তন কেটে অথবা স্তন রেখে অস্ত্রোপচার (সার্জারী)। সাম্প্রতিক কালে পুরো ব্রেস্ট না কেটেও ক্যান্সারের চিকিৎসা একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি ( ব্রেস্ট কনজারভিং সার্জারী)।

২।  কেমোথেরাপি

৩।  রেডিওথেরাপি

৪।  হরমোনথেরাপি

৫।  বায়োলজিক্যাল – ইমিনোথেরাপি

সর্বোপরি বলা যায় স্তনে চাকা বা ব্যাথা নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তার কারণ নেই কিন্তু অবহেলাও করা উচিত নয়। সময় মত বিশেষজ্ঞ ব্রেস্ট সার্জনের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।

Click to rate this post!
[Total: 2 Average: 4]

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Contact With Us
Send via WhatsApp